Wednesday, December 14, 2016

রামপাল বিদ্যুৎ অভিশাপ না আশীর্বাদ

রামপাল বিদ্যুৎ অভিশাপ না আশীর্বাদ


রামপাল বিদ্যুৎ অভিশাপ না আশীর্বাদ


রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র

সত্যি সত্যি কী সুন্দরবন ও সুন্দরবনের বিশাল প্রানী সম্পদ, উদ্ভিদ সম্পদ বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছে যাবে? 
উন্নয়নের অন্নতম শর্ত হল বিদ্যুৎ। যেখানে বিদ্যুৎ নেই সেখানে উন্নয়ন আশাই করা জায় না। 
গ্লোবাল পৃথিবীর সাতে তাল মিলিয়ে তথা সব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি নিয়ে আলোচনাই আজকের বিষয় ।

সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য নিয়ে কারও সন্দেহ থাকার কথা নয়, যদি না আপনি সুন্দরবন নামটি প্রথম শুনে থাকেন। সুন্দরবন বিপুল সম্পদের সমাহার।
বিভিন্ন রকমের প্রাণী যেমন- হরিণ, বানর, নদীচর কচ্ছপ, বিভিন্ন জাতের সাপ, নোনা পানির কুমির এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ।
ভাবছেন সুন্দর বনের প্রধান আকর্ষণটি মিস করে গেলাম? না। আমাদের দেশের জাতীয় পশুর একমাত্র বাসস্থান হচ্ছে এই সুন্দরবন। যা রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামে পৃথিবী খ্যাত ।
কিন্তু এই বাসস্থান যদি নষ্ট হয় তাহলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কী আমাদের গ্রাম্য এলাকায় হবে। সেটাই চিন্তার বিষয়।
এমন দিন যেন আমাদের দেখতে না হয় যে গ্রামের লোকজন বাঘের ভয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না। ছোট বেলায় আমাদের দাদা,দাদুদের কাছে শুনা গল্প যেন আজ সত্যি না হয়।
সেই ভয় আমাদের দেশের জন্যই হউক অথবা ভারতের সীমান্ত গ্রাম গুলোতেই হওয়ার আশংকা কিন্তু থেকেই যায়। তাছাড়া বিভিন্ন ধরণের প্রাণীজ সম্পদের উপযুক্ত পরিবেশ ও মাটি হচ্ছে এই সুন্দরবন।
বর্তমানে বিশ্ব প্রযুক্তি এবং প্রতিযোগিতার সাথে তাল মিলিয়ে ও এগিয়ে নিয়ে যেতে বাংলাদেশ সরকার হাতে নিয়েছে প্রথম কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্প।
এই রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্যযে সীমানা বা আকার টিক হয়েছে তা বাংলাদেশের প্রাণ সুন্দরবনের পাশেই।

দেখা যায় যে, বর্তমানে এই দেশে প্রতি বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৪.৫০০ মেগা ওয়াট। দেশের এই বিশাল জনগোষ্ঠী মধ্যে ৭৬ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সেবা পাচ্ছে। এই অপরিপূর্ণ ঘাটতি মেটানোর লক্ষে বাংলাদেশ সরকার রামপাল বিদ্যুৎ চুক্তি হাতে নিয়েছে।

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সম্পূর্ণ আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হবে বলে জানানো হয়েছে। আমরা জানি, কয়লা পুড়ালে প্রচুর নাইট্রোজেন গ্যাস নিঃসৃত হয়, যা আমাদের পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
কিন্তু রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও সেখানে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নিঃসৃত গ্যাস কে তরল করে নির্দিষ্ট মাত্রায় আনা হবে যাতে পরিবেশের ক্ষতি না হয়।
১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতার এই কেন্দ্র নির্মাণে প্রয়োজনীয় ১দশমিক ৪৯বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদন সম্ভব হবে।
এ বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে খবর,মিডিয়া,সোসিয়াল মাধ্যমগুলোতে মানুষের দ্বিমতের শেষ নেই।
যে যার মতো ব্যাখ্যা দিয়েছে। গড়ে উঠেছে বিভিন্ন দ্বিমত পোষণকারী দল। সুন্দরবন রক্ষায় মিছিল, পত্রিকায় লেখা ইত্যাদি।
আপনিও কি চান বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন না হউক?
রিছারচে বলে যে কোন ফরেস্ট এরিয়া থেকে ১০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত এরিয়াকে ক্রিটিকাল এরিয়া বলে।
আর এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সুন্দরবন থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার। তো দেখা যায় যে ৪ কিলোমিটার দূরত্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্র টি স্থাপন হবে।
তাছাড়া বৈজ্ঞানিক ভাবে অসম্পন্ন ও বিজ্ঞান সম্মত নয় বলে জানানো হয়। রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবকাঠামগত উন্নয়ন চুক্তি বাতিল ও সুন্দরবন রক্ষায় বিজ্ঞানসম্মত পরিকল্পনা প্রনয়ন ও তার বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছে "সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি "।
জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি


পরিশেষে ডিজিটাল জগৎ ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন চুক্তি হলে ও এটি আমাদের দেশের প্রাণ তথা পৃথিবীর অন্যতম ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের জন্য হুমকিস্বরূপ ।
তাই আমি অবশ্যই চাইছিনা ডিজিটাল হওয়ার নেশায় এবং উন্নয়নের স্বার্থে ও যে আমার দেশের গৌরব এবং প্রকৃতির এই অদ্বিতীয় উৎস যাতে বিলিন হয়ে না যায়।

Written by: Tuhin.

No comments:

Post a Comment